সর্বশেষ

পদ্মা সেতু রুটের বাস ভাড়া নির্ধারণ করেছে বিআরটিএ

প্রকাশ :


২৪খবর বিডি: 'পদ্মা সেতু হয়ে যেসব বাস চলবে তার ভাড়া নির্ধারণ করেছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। রাজধানী ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে মাওয়া ফেরিঘাট হয়ে চলাচল করে এমন ১৩ রুটের ভাড়ার তালিকা করা হয়েছে। ঢাকা শহর হয়ে চললে যানজট বাড়বে- এই যুক্তিতে গাবতলী টার্মিনাল থেকে চলা বাস পদ্মা সেতু হয়ে চলতে রুট পারমিট পাবে না। গাবতলীর বাস আরিচা ঘাট হয়ে চলবে।'

-বিআরটিএ সূত্র ২৪খবর বিডিকে এসব তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার সমকালকে বলেছেন, ভাড়া নির্ধারণ করে অনুমোদনের জন্য সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

'ভাড়া নির্ধারণের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বিআরটিএ এর তালিকা চূড়ান্ত করেছে। তালিকার কপি ২৪খবর বিডির কাছে রয়েছে। দূরপাল্লার ৫১ আসনের বাসে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ১ টাকা ৮০ পয়সা। তবে বাসের ভাড়া নির্ধারিত হয় ৪০ আসন ধরে। ফলে কিলোমিটারপ্রতি প্রকৃত ভাড়া ২ টাকা সাড়ে ২৯ পয়সা। এর সঙ্গে যোগ হবে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে ও পদ্মা সেতুর টোল। এক্সপ্রেসওয়ের টোল কার্যকরের প্রজ্ঞাপন না হওয়ায় বিআরটিএ তা বাদ দিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করেছে। সংস্থাটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রজ্ঞাপন জারি হলে যাত্রীপ্রতি ভাড়া আরও ১২ টাকা ৩৮ পয়সা বাড়বে।'

-ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে মাওয়া, ভাঙ্গা, মাদারীপুর হয়ে বরিশালের দূরত্ব ১৫৬ কিলোমিটার। দূরত্বের হিসাবে ভাড়া ৩৫৮ টাকা ২ পয়সা। এ পথে আগে টোল ছিল ১ হাজার ৭৫২ টাকা। পদ্মা সেতুতে বাসের টোল ২ হাজার টাকা। তবে ফেরির ১ হাজার ৫৮০ টাকা টোল আর লাগবে না। ফলে মোট টোল ২ হাজার ১৭২ টাকা। যাত্রীপ্রতি টোল ৫৪ টাকা ৩০ পয়সা। পথের দূরত্ব ও টোলসহ ঢাকা-বরিশাল রুটে যাত্রীপ্রতি ভাড়া ৪১২ টাকা ৩২ পয়সা।

'এক্সপ্রেসওয়েতে টোল দিতে হবে আগামী ১ জুলাই থেকে। গত বছর অর্থ বিভাগ এক্সপ্রেসওয়েতে বাসের জন্য কিলোমিটারে ৯ টাকা টোল অনুমোদন করেছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ তা আড়াই গুণ বাড়াতে চাইলেও পরিবহন ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপাতত তা হচ্ছে না। ফলে ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে বাসে টোল ৪৯৫ টাকা।

'বাসের ভাড়া নির্ধারণ কমিটির প্রধান তথা বিআরটিএর পরিচালক (প্রকৌশল) শীতাংশু শেখর বিশ্বাস জানিয়েছেন, এক্সপ্রেসওয়ের টোলের পরিমাণকে ৪০ দিয়ে ভাগ করে যাত্রীপ্রতি ভাড়া নির্ধারিত হবে। পদ্মা সেতু ও এক্সপ্রেসওয়ের টোলের জন্য ভাড়া বাড়বে মাত্র ২২ টাকা।

-এ হিসাবে ঢাকা-বরিশালের ভাড়া দাঁড়াবে ৪১২ টাকা ৩২ পয়সা এবং ১২ টাকা ৩৭ পয়সার যোগফল অর্থাৎ ৪২৪ টাকা ৬৯ পয়সা। আদায়যোগ্য ভাড়া হবে ৪২৫ টাকা। বাকি ১২ রুটে ভাড়া হবে ঢাকা-গোপালগঞ্জ ৫১৭, ঢাকা-খুলনা ৬৬২, ঢাকা-শরীয়তপুর ২৩১, ঢাকা-পিরোজপুর ৬৪১, ঢাকা-পটুয়াখালী ৫১৩, ঢাকা-মাদারীপুর ৩৪০, ঢাকা-সাতক্ষীরা ৬৪৫, ঢাকা-ফরিদপুর ৩০১, ঢাকা-চরফ্যাসন (ভোলা) ৬৬৬, ঢাকা-শরীয়তপুর ভায়া বাবুবাজার ২৩২ এবং ঢাকা-কুয়াকাটা ৭০৯ টাকা।

'সায়েদাবাদ থেকে যেসব বাস মাওয়ার শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি ও বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরিতে পদ্মা নদী পার হয়ে চলে, আপাতত সেসব রুটের ভাড়া নির্ধারণ করেছে বিআরটিএ। পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণবঙ্গের জেলা থেকে নতুন রুটে বাস চালাতে চাইলে পারমিট নিতে হবে। নতুন রুট চালু হলে ভাড়াও নির্ধারণ করে দেবে বিআরটিএ।'

সংস্থাটির সূত্র ২৪খবর বিডিকে নিশ্চিত করেছে, গাবতলীর বাসকে পদ্মা সেতু হয়ে চলতে রুট পারমিট দেওয়া হবে না। দিলে শহরের ভেতরে যানজট বাড়বে।

'সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্যাহ ২৪খবর বিডিকে বলেছেন, যানজটের কারণে শহরের ভেতর দিয়ে নতুন রুট পারমিট দেওয়া হচ্ছে না। গাবতলীর বাস সায়েদাবাদে সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই। ফলে ওই টার্মিনালের বাস পদ্মা সেতুর সুফল পাবে না।

'রাজধানীকে পাশ কাটিয়ে চলতে ঢাকার চারদিকে বৃত্তাকার সড়ক (ইনার সার্কুলার রুট) নির্মাণের পরিকল্পনা প্রায় তিন দশকের পুরোনো। ৮৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক টাকার অভাবে হচ্ছে না। গাবতলীর গাড়ি যাতে শহর এড়িয়ে পদ্মা সেতুতে উঠতে পারে সেজন্য বেড়িবাঁধ সড়কের গাবতলী থেকে বছিলা, হাজারীবাগ, সোয়ারীঘাট অংশকে ছয় লেনে উন্নীত করা এবং সোয়ারীঘাট থেকে এক্সপ্রেসওয়ের কদমতলী অংশ পর্যন্ত উড়াল সড়ক ও সেতুর নির্মাণ কাজ একই কারণে শুরু করা যাচ্ছে না। দুই বছর আগে এই ১২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের সমীক্ষা শেষ হয়েছে।
ঋণ না পেয়ে সরকারি অর্থায়নে প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তাব করতে যাচ্ছে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ)।'

পদ্মা সেতু রুটের বাস ভাড়া নির্ধারণ করেছে বিআরটিএ

-উত্তরবঙ্গ থেকে আসা গাড়ি শহরের বাইরে দিয়ে পদ্মা সেতুতে নিতে বছিলা থেকে কেরানীগঞ্জের কলাতিয়া-রুহিতপুর সড়ককে ১৮ থেকে ২৪ ফুটে উন্নীত করা হয়েছে। তবে সরেজমিন দেখা গেছে, ঘরের জানালা, বারান্দা, কার্নিশ, চাল ঘেঁষে সড়ক নির্মিত হয়েছে। দূরপাল্লার বাস ও ভারী যানবাহন চলাচলে বাড়িঘরে গাড়ি উঠে দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

'সওজের প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম মনির হোসেন পাঠান ২৪খবর বিডিকে বলেন, যথাযথ মানে প্রশস্তকরণ প্রকল্পের আওতায় সড়ক চওড়া করা হয়েছে। এই প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণের সুযোগ ছিল না। সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে এই সড়ক চওড়া করা হয়েছে।'
-সিলেট ও চট্টগ্রামের বাস সায়েদাবাদ দিয়ে পোস্তগোলা হয়ে পদ্মা সেতুতে যেতে পারবে। তবে ময়মনসিংহ অঞ্চলের ছয় জেলার গাড়ি ঢাকা শহরের যানজট না ঠেলে পদ্মা সেতুতে যাওয়ার পথ নেই।

Share

আরো খবর


সর্বাধিক পঠিত